বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত আব্দুল আজিজের (২৮) স্ত্রীর দেনমোহর পরিশোধ করেছে জামায়াত।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) জামায়াতের শেরপুরের নকলা উপজেলা আমির গোলাম সারোয়ার নিহতের স্ত্রী হোসনা বেগমের হাতে বিয়ের কাবিন বাবদ দেনমোহরের এ টাকা তুলে দেন। এ সময় জামায়াত নেতা আতিক আলম, নারায়ণখোলা কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম ইমরান হোসেন সবুজসহ স্থানীয় নেতরা উপস্থিত ছিলেন।
আ. আজিজ শেরপুরের নকলা উপজেলার নারায়ণখোলা বাজার এলাকার মৃত মোজাম্মেলের ছেলে। আন্দোলনে ঘাতকের গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আব্দুল আজিজ। গত ৭ আগস্ট তিনি ইন্তেকাল করেন।
জানা যায়, আব্দুল আজিজ (২৮) গত জুলাই মাসে বিয়ে করেন। নববধূ হাসনা খাতুনের জন্য নিজের উপার্জনের টাকায় গড়েছিলেন একটা ঘরও। পরিকল্পনা ছিল আগস্ট মাসে বেতন পেলে ছুটি নিয়ে নতুন ঘরে বউকে তুলবেন। তবে ঘাতকের বুলেটে সবকিছুই তছনছ হয়ে গেছে। খুব অল্প বয়সে তিনি বাবাকে হারান। বড় হয়েই সংসারের হাল ধরেন আ. আজিজ।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গাজীপুরের বাসন থানা এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় জুনিয়র রিব কাটারম্যানের কাজ করতেন আ: আজিজ। গত ৫ আগস্ট গাজীপুরের নিজ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফেসবুকে লাইভ করছিলেন আজিজ। ওই সময় পুলিশের ছররা গুলি লাগে তার চোখ-মুখসহ সারা শরীরে। এরপর তার এক সহকর্মী তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে দুই দিন চিকিৎসার পর ৭ আগস্ট আজিজের মৃত্যু হয়।
স্বজনরা আরও জানান, গত ১ জুলাই আব্দুল আজিজের সঙ্গে পারিবারিকভাবে একই গ্রামের হোসনা বেগম নামে এক তরুণীর বিয়ে হয়। এক লাখ টাকা দেনমোহর সাব্যস্ত করে বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। তার লক্ষ্য ছিল আগস্ট মাসের বেতন ভাতা নিয়ে বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন করবেন। কিন্তু তার মৃত্যুতে দেনমোহর পরিশোধ হয়নি। পরে দেনমোহর পরিশোধে উদ্যোগ নেয় উপজেলা জামায়াত।
জামায়াত নেতারা বলেন, শহীদ আব্দুল আজিজ আমাদের জাতীয় সম্পদ। তার কাছে জাতির অনেক ঋণ। আমরা বেঁচে থাকতে শহীদ পরিবার ঋণের মধ্যে থাকবেন, দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী চুপ করে বসে থাকতে পারে না। আমরা আমাদের দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে দূরে থাকতেও পারি না। তাই এই টাকা পরিশোধ করে শহীদকে ঋণ মুক্ত করা হলো। সবাই মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট দোয়া করবেন এ পরিবারটির জন্য।