ঢাকা২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থ বানিজ্য
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. ইসলাম
  6. এভিয়েশন
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলা
  9. জব মার্কেট
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশবাংলা
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
বিজ্ঞাপন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

এক যুবকের দুই প্রেমিকা, একজনের ফাঁস, অন্যজনের বিয়ে

জনবার্তা প্রতিবেদন
জুলাই ২২, ২০২৩ ৪:২৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ভোলার চরফ্যাশনে কলেজছাত্র মোরশেদ আলমের প্রেমে মজেছিলেন দুই তরুণী। এই দুই প্রেমিকার একজন বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ৩দিন ধরে অনশনে আছেন। এ অনশনের খবর শুনে আরেক প্রেমিকা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আর অভিযুক্ত প্রেমিক মোরশেদ নিজ ঘরবাড়ি ছেড়ে এখন লাপাত্তা।

এদিকে অনশনকারী প্রেমিকাকে ঘরে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মোরশেদের পরিবারের বিরুদ্ধে। গত ২দিন ধরে অনশনকারী তরুণীকে ঘরে আটকে রাখলেও উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় পুলিশ। আর উৎসুক জনতা সকাল-বিকেল ভিড় করছেন প্রেমিক মোরশেদের বাড়িতে।

ভোলার চরফ্যাশনে কলেজছাত্র মোরশেদ আলমের প্রেমে পড়েছিলেন দুই তরুণী। এই দুই প্রেমিকার একজন বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ৩ দিন ধরে অনশন করেছিলেন। এ অনশনের খবর শুনে আরেক প্রেমিকা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে শুক্রবার (২১ জুলাই) মধ্যরাতে অনশনে বসা ওই প্রেমিকাকে কাবিননামা ছাড়া বিয়ে করেন মোরশেদ আলম।

এদিকে অনশনকারী প্রেমিকাকে ঘরে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মোরশেদের পরিবারের বিরুদ্ধে। মোরশেদের পরিবার ছিনিয়ে নিয়েছে তার ব্যবহ্নত মুঠোফোন। ৩ দিন ধরে অনশনে বসা তরুণীকে ঘরে আটকে রাখলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কিংবা পুলিশ প্রশাসন তাকে উদ্ধারে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেননি। অন্য প্রেমিকা আত্মহত্যা করলে নড়েচড়ে বসেন পুলিশ। এরপর পুলিশের নির্দেশেই বিনা কাবিননামায় বিয়ে হয় তাদের।

শনিবার (২২ জুলাই) দুপুরে দক্ষিণ আইচা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাখাওয়াত হোসেনবিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন মোরশেদের বাড়িতে ভিড় করতে থাকেন।

জানা যায়, বুধবার (২০ জুলাই) বিকেলে চরফ্যাশন উপজেলার ৯নং চর মানিকা ইউনিয়নের করিমপাড়া গ্রামের মাওলানা সামসুদ্দিনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে লালমোহন উপজেলার চর ছকিনা গ্রামের ইয়াসনুর বেগম নামে এক তরুণী অনশনে বসেন।

ওই তরুণীর দাবি সামসুদ্দিনের ছেলে মোরশেদের সঙ্গে তার দুই বছর প্রেম চলছে। তরুণীর পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হলে প্রেমিক মোরশেদের প্ররোচনায় গত ১২ জুলাই বাড়ি থেকে ৬০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে আসেন।

এরপর থেকে ১৯ জুলাই দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে মোরশেদ তাকে নিয়ে একান্তে সময় কাটান। একইদিন ওই তরুণীকে দক্ষিণ আইচা গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের সামনে রেখে মোরশেদ টাকাপয়সা নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। নিরুপায় হয়ে ওই তরুণী মোরশেদের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন। মোরশেদ তাকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেছেন বলেও দাবি করেন।

শুক্রবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত ছেলের ঘরের মধ্যে মেয়েটিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। মারধর করে ছিনিয়ে নেওয়া হয় মোবাইল ফোন।

এদিকে, মোরশেদের বাড়িতে এক প্রেমিকার অনশনের খবরে অপর প্রেমিকা চরফ্যাশন উপজেলার এওয়াজাপুর গ্রামের মো. বাচ্চু হোসেনের মেয়ে নাবিলা আক্তার বৃহস্পতিবার রাতে ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

নাবিলার সঙ্গে মোরশেদের পারিবারিকভাবে বিয়ে ঠিক হয়েছিল।

নাবিলার মা জান্নাত বেগমের দাবি, প্রতারক মোরশেদের প্রেমের ফাঁদে পড়ে তার ফুটফুটে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে।

তিনি বলেন, ‘প্রতারক ছেলে মোরশেদের জন্য দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল আমার আদরের সন্তান। আমি এ শোক কিভাবে সইব?’

মোরশেদের বাবা মাওলানা সামসুদ্দিন স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে মোরশেদ দ্বিতীয় সন্তান।

নাবিলার বাবা শ্রম মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন। তিন বোনের মধ্যে নাবিলা সবার বড় ছিল।

শশীভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক জানান, নাবিলার মুঠোফোন যাচাই-বাছাই করে মোরশেদের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়াও নাবিলার বান্ধবীরাও পুলিশকে প্রেমের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নাবিলার সঙ্গে মোরশেদের বিয়েও ঠিক হয়েছিল। কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের বিয়ে হতো। কিন্তু নাবিলা যখন জানতে পেরেছে, মোরশেদ তার সঙ্গে প্রতারণা করে অন্য আরেকটি মেয়ের সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্ক গড়িয়েছে এবং মেয়েটি মোরশেদের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেছে। তখন রাগে ক্ষোভে মেয়েটি গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, নাবিলার পরিবার এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। তারা এ ঘটনাটি নিয়ে সামনে এগোতে রাজি হননি। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনা ময়নাতদন্তে নাবিলার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপরদিকে দক্ষিণ আইচা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাখাওয়াত হোসেন জানান, এ ঘটনাটি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মোরশেদের বাড়িতে যায়। মোরশেদ কয়েকদিন ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। অনশনে বসা তরুণী যাতে অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনা না ঘটায় সেজন্য মোরশেদের সঙ্গে তার বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়।

শাখাওয়াত হোসেন আরও জানান, অনশনে বসা তরুণী প্রাপ্তবয়স্ক হলেও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে ছেলে অপ্রাপ্তবয়স্ক। তাই ছেলের পরিবারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কাবিননামা না হলেও ইসলামি শরিয়ত মাফিক যেনো তাদেরকে বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হয়। তাই শুক্রবার মধ্যরাতে কাবিননামা ছাড়া তাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়েতে মেয়েটির পরিবারকে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হলেও তারা কেউ আসেনি।