ঢাকা২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থ বানিজ্য
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. ইসলাম
  6. এভিয়েশন
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলা
  9. জব মার্কেট
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশবাংলা
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
বিজ্ঞাপন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জিয়া বাংলাদেশে পাকিস্তানি সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন: হুইপ স্বপন

জনবার্তা প্রতিবেদক
ডিসেম্বর ১৫, ২০২২ ৯:০৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

দেশের নাম বাংলাদেশ থাকলেও কার্যত জেনারেল জিয়া বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর সেনাশাসক জিয়াউর রহমান সকল ক্ষমতার দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন। কাগজে কলমে বিচারপতি আবু সাদাত মো. সায়েম রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক থাকলেও ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন জেনারেল জিয়া ও তার সহকর্মীরা। দেশের নাম বাংলাদেশ থাকলেও কার্যত জেনারেল জিয়া বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পাকিস্তানের বিশ্বস্ত সেবাদাস সাবেক বিচারপতি, আমলা, শিক্ষাবিদদের দিয়ে তিনি সায়েম সাহেবের উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেন।

আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হুইপ স্বপন বলেন, বিচারপতি আব্দুস সাত্তার ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এদেশে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণের আসন অবৈধভাবে শূণ্য ঘোষনা করে লোক দেখানো উপ-নির্বাচন করে জামাত-মুসলিমলীগারদের বিজয়ী ঘোষণার প্রহসন হয়। সেই বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে জিয়াউর রহমান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রপতির বিশেষ সহকারী নিযুক্ত করে ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দখলদার পূর্ব পাকিস্তান সরকারের মূখ্য সচিব শফিউল আজমকে করা হয় কেবিনেট সেক্রেটারি। পরবর্তীতে তাকে উপদেষ্টা ও মন্ত্রী করা হয়। ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান রুলার ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী হিসেবে কর্মরত আজিজ উল হককে উপদেষ্টা করা হয়। পাকিস্তান পুলিশের আইজি, পূর্ব পাকিস্তানের চীফ সেক্রটারী, পিএসসি’র চেয়ারম্যান ও আইয়ুব খানের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী কাজী আনোয়ারুল হককে জিয়া উপদেষ্টা বানান। পাকিস্তানের হিলাল-ই-খিদমত উপাধি প্রাপ্ত আইয়ুব আমলে প্রাদেশিক সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী, পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মির্জা নুরুল হুদাকে জিয়া উপদেষ্টা, পরবর্তীতে মন্ত্রী বানান এবং রাষ্ট্রপতি সাত্তার তাকে উপ রাষ্ট্রপতি বানান। পাকিস্তান ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ওয়েলফেয়ারের সচিব আকবর কবিরকে উপদেষ্টা বানান। নরঘাতক ইয়াহিয়া খানের শিক্ষা মন্ত্রী অধ্যাপক মুহাম্মদ শামসুল হককে জিয়া উপদেষ্টা বানান। পাকিস্তান পিএসসি’র চেয়ারম্যান ডঃ এম এ রশীদকে জিয়া উপদেষ্টা বানান।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী, চাকুরিচ্যূৎ , জার্মান প্রবাসী সিতরাত-এ- জুররাত খেতাব প্রাপ্ত এম জি তওয়াবকে বিদেশ থেকে ডেকে এনে জিয়াউর রহমান বিমান বাহিনীর প্রধান, উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও উপদেষ্টা বানান। ১৯৭৬ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এমজি তওয়াবের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত ইসলামী জলসায় যুদ্ধাপরাধী সাঈদীরা শ্লোগান দেয় ‘তওয়াব ভাই তওয়াব ভাই, চান তারা পতাকা চাই।’

স্বপন বলেন, মূলতঃ মুক্তিযোদ্ধা নামধারী জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ এর ৭ নভেম্বরের পরপর ৩০ লক্ষ শহীদের রক্ত বিধৌত বাংলাদেশে পাকিস্তানীদের অতি বিশ্বস্ত সেবাদাসদের দিয়ে সায়েম সাহেবের উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেন। উপদেষ্টা পরিষদই মার্শাল ল’ সরকারের মন্ত্রিসভা। জিয়ার তত্ত্বাবধানে পাকিস্তানী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত সব কিছু পরিবর্তন করতেন।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ধূর্ত জিয়াউর রহমান প্রথমে উপদেষ্টা পরিষদে সরাসরি নরঘাতক যুদ্ধাপরাধীদের আনেন নি। কৌশলে যুদ্ধাপরাধী নয়, কিন্তু পাকিস্তানের বিশ্বস্ত সেবাদাস এবং মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ বিরোধীদের দিয়ে সরকার গঠণ করে নতুন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে সরাসরি যুদ্ধাপরাধীদের সুযোগমত মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সরাসরি পাকিস্তানের পক্ষে গণহত্যায় অংশগ্রহণকারী চাকুরীচ্যূৎ ১৯ জন সেনা কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ পুলিশের এসপি পদে আত্তীকরণ করে তাদের দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগার নিধন করেছেন।

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এমপি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উদ্বোধন করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা সভাপতি ম. রুহুল আমিন। বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক বেগম ফরিদুন্নাহার লাইলী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আলহাজ্ব আব্দুস সবুর, জেলা সাধারন সম্পাদক রৌশন আলী মাস্টার, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম সরকার, বেগম সেলিমা আহমাদ এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হানিফ সরকার, আলহাজ্ব হারুনুর রশীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, সৈয়দ আব্দুল কাইউম খসরু, উপজেলা চেয়ারম্যান আহসানুল আলম সরকার কিশোর প্রমুখ।

সম্মেলনের ২য় অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ সভাপতি এবং সাবেক ছাত্রনেতা গোলাম সারোয়ার চিনু সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।