ঢাকা২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ২০শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থ বানিজ্য
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. ইসলাম
  6. এভিয়েশন
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলা
  9. জব মার্কেট
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশবাংলা
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
বিজ্ঞাপন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মিলিটারি ডিক্টেটরদের মার্শাল ল’ কি গণতান্ত্রিক ধারা প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান মন্ত্রী : শেখ হাসিনা

জনবার্তা প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ১৮, ২০২২ ৮:৫২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বুদ্ধিজীবীদের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশ্ন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপিসহ মিলিটারি ডিক্টেটরদের হাত ধরে যেসব দল তৈরি হয়েছে সেগুলোর মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা নেই। আওয়ামী লীগ উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন দল। দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দেশের মানুষকে শোষণ-বঞ্চনার হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্য নিয়ে। আর যাদের জন্ম হয়েছে অবৈধভাবে, ক্ষমতা দখল করে, মার্শাল ল’-এর মধ্য দিয়ে তারা আমাদের গণতন্ত্রের ছবক দেয়, পরামর্শ দেয়। তারা নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবে। মার্শাল ল’ দিয়ে, সারা রাত কারফিউ দিয়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে, তারা দেশবাসীকে কীভাবে গণতন্ত্র দেয় আর কীসের গণতন্ত্র দেয় আমি বুঝি না। গতকাল শনিবার গণভবনের জাতীয় কমিটির সভার শুরুতে তিনি এ কথা বলেন। পরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভা শুরু হয়। সভা পরিচালনা করেন দলের সাধারন সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গণভবনের ভেতরে ফাঁকা জায়গায় পৃথক প্যান্ডেল করে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জাতীয় কমিটির সদস্যসহ দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে কিছু মানুষ আছে যারা নিজেদের বুদ্ধিজীবী বলে পরিচয় দেন, জ্ঞানী-গুণী বলে পরিচয় দেন, তাদেরও মুখে শুনি- দেশে নাকি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। আমার এখানে প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে মিলিটারি ডিক্টেটরদের সময় যারা মার্শাল ল’ দিয়ে রাষ্ট্র চালিয়েছিল, সেটাকেই কি তারা গণতন্ত্র বলতে চান? ওটাই কি তাদের গণতান্ত্রিক ধারা ছিল? তিনি বলেন, আমি জানি না যারা এখনো গণতন্ত্রের খোঁজ করেন, মনে হয় যেন দুরবীন দিয়ে ওনারা গণতন্ত্র দেখতেছেন। তাদের আমি জিজ্ঞেসা করবো জাতির পিতার সাড়ে তিনবছর ও আওয়ামী লীগের আমল ছাড়া কবে গণতন্ত্র ছিল? ক্ষমতাতো ছিল সেননিবাসে বন্দী। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া সবইতো সেনানিবাসে বন্দী। সেনানিবাস থেকে চালানো হত দেশ। তাহলে গণতন্ত্র বা জনগণের শক্তিটা কোথায়? জনগণের শক্তি ছিল না। খালেদা জিয়া বা জিয়া বা এরশাদের হাতে। জনগণতো সেখানে অবাঞ্চিত, শক্তি ছিল না। যারা এই ১৪ বছর নিয়ে কথা বলেন তাদের বলবো এর আগের বাংলাদেশটা দেখেন, আর এখন বাংলাদেশটা দেখেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে দিয়েছি। প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছি। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।

বিএনপি কোন মুখে ২০১৪ এবং ২০১৮ এর নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে তা জানতে চেয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ফলাফল কি? বিএনপি পেয়েছিল ৩০ টা সিট (আসন)। এটা সবার মনে রাখা উচিত। ওই নির্বাচন নিয়েতো কেউ প্রশ্ন করতে পারে না। আর আওয়ামী লীগ দুই তৃতীয়াংশ মেজরিটি পায়। তাহলে পরবর্তী ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিএনপি কোন মুখে প্রশ্ন তোলে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে বলে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়। হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করা হয়। সংবিধান লংঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পালা শুরু হয়। আর সেটা করতে গিয়ে অবৈধ মিলিটারি ডিক্টেটর সেনাবাহিনীর বহু মুক্তিযোদ্ধা অফিসার, হাজার হাজার সৈনিককে হত্যা করে। বিমানবাহিনীর সদস্যদের হত্যা করে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন করে। তাদের গ্রেপ্তার করে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর কারাগারে নিক্ষেপ করে। এই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা ক্ষমতায় বসে একটা দলও গঠন করে ফেলে এবং মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। তাদের শাসনকে গণতন্ত্র বলেন? তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়, দেশ এগিয়ে যায়। জনতাই আমাদের মূল শক্তি। কাজেই জনতার শক্তিতেই বলীয়ান হয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

জাতির পিতা এই দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, এদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে- এমন দৃঢ়তা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে আজ যে মর্যাদা পেয়েছে, সেই মর্যাদা নিয়েই চলবে। স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী- যাদের বিচার জাতির পিতা শুরু করেছিলেন; আমরা তাদের বিচার করছি। জাতির পিতার হত্যাকারীদের জিয়াউর রহমান অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে দায়মুক্তি দিয়েছিল। তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল। আর আলবদর-রাজাকারদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল। আমরা তাদের বিচার করেছি। তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়াও খুনি রশিদ-হুদাকে ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে বসিয়েছিল। তাদেরও বিচার করেছি। তাদের বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমেরিকায় খুনি রাশেদ, কানাডাতে খুনি নূর, পাকিস্তানে খুনি রশিদ আর ডালিম আশ্রয় নিয়ে আছে। মোসলেম উদ্দিন বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়। কখনো তার হদিস পাওয়া যায়, কখনো যায় না। কিন্তু প্রতিটি দেশের সরকারের কাছে আমরা আবেদন করেছি তাদের ফিরে আনতে। এরা জাতির পিতার হত্যাকারী, নারী হত্যাকারী, শিশু হত্যাকারী- এদেরকে ফেরত দিতে হবে। দুর্ভাগ্যের বিষয় তাদের কাছ থেকে আমরা সেই সাড়া পাই না। আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি, আমাদের যে মানবাধিকার লংঘন করা হল, সেই বিবেচনা তাদের নেই। কিন্তু ওই খুনিদের মানবাধিকার নিয়ে তারা ব্যস্ত। কারণ তাদের ফাঁসির হুকুম হয়েছে। সেজন্য তাদের অধিকার রক্ষা করে যাচ্ছে। এটাই হচ্ছে আমাদের দুভাগ্য।

আওয়ামী লীগ সরকার ন্যায় বিচারে বিশ্বাস করে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে যে বিচারহীনতার কালচার শুরু করেছিল জিয়াউর রহমান; সেখান থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রত্যেকটা সেক্টরের উন্নতি করেছি। জাতির পিতার এই বাংলাদেশে একটি মানুষও অভুক্ত থাকবে না। একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না। প্রতিটি মানুষ তার মৌলিক অধিকার পাবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগের সকল নেতাকর্মীদের অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ আজ উন্নয়নশীল হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। সেই পরিকল্পনাও তৈরি করে আমরা তা কার্যকর করতে শুরু করেছি। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ রুখতে পারবে না।

দলের গঠনতন্ত্রের ১৭ (ক) ধারায় বলা আছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি জাতীয় কমিটি থাকিবে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের প্রত্যেক সাংগঠনিক জেলা হইতে একজন করিয় সদস্য স্ব স্ব জেলা ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল কর্তৃক জাতীয় কমিটিতে নির্বাচিত হইবেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কর্মকর্তা, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যবৃন্দ এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি কর্তৃক মনোনীত ২১ জন সদস্য এবং উপযুক্তভাবে নির্বাচিত ও মনোনীত সদস্যবৃন্দকে লইয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটি গঠিত হইবে। জাতীয় কমিটির মোট সদস্য সংখ্যা হইবে ১৮০ জন, যার মধ্যে ৮১ জন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য, ৭৮ জন সাংগঠনিক জেলা প্রতিনিধি এবং ২১ জন সভাপতি কর্তৃক মনোনীত।’

আগামী ২৪ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আসন্ন ২২তম জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে এই বর্তমান কমিটির মেয়াদে জাতীয় কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে আসন্ন সম্মেলনের বাজেট পেশ করা হয় এবং যারা বিভিন্ন সাংগঠনিক অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনার করে আবেদন করেছেন, তাদের বিষটিও তোলা হয়। এছাড়া আগামী জাতীয় কাউন্সিল সম্পর্কে জাতীয় কমিটির সদস্যদের কাছ থেকে পরামর্শ চাওয়া হয়।