একের পর এক জালিয়াতি। মালিকপক্ষের বিশাল অংকের ঋণ নেয়া, সব মিলিয়ে দেশের টালমাটাল অর্থনৈতিক অবস্থার মাঝেই আলোচনার কেন্দ্রে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে হঠাৎ করেই বদলে যায় ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা। নিয়ন্ত্রণে নেয় দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ। এরপরেই আসতে থাকে একের পর এক পরিবর্তন। নতুন পর্ষদের পাশাপাশি দায়িত্ব নেয় নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি।
ইসলামী ব্যাংকের ভেতরে আদতে কী হচ্ছে? খতিয়ে দেখতে নড়েচড়ে বসেছে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ফ্যাইন্যান্স ডিডিশনকে বলা হয়েছে যে, আসলে এ ব্যাংকের ভেতরে কি হচ্ছে তা খতিয়ে দেখে একটি প্রতিবেদন দেয়ার জন্য।
এমন নির্দেশনার পরই ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে তদন্তে নেমেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তিন সদস্যের পরিদর্শন দল। এরই মধ্যে আগুনে ঘি ঢালার মতো খবর, ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে ব্যাংকটির খোদ মালিকানা প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ।
ইসলামী ব্যাংকের সব শেয়ার বিক্রি করলেন সাবেক চেয়ারম্যান মুস্তাফা আনোয়ার
তবে এসব অনিয়মের খবর মানতে নারাজ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দাবি, কোনো কিছুতেই অনিয়ম হয়নি। এস আলম গ্রুপের কাছেও এত টাকার ঋণ নেই ব্যাংকটির। তিনি দাবি করেন, সম্প্রতি ভোগ্যপণ্য আমদানি নিশ্চিত করতেই কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেয়া হয়েছে।
এদিকে ব্যাংকটির বর্তমান অবস্থা ও অনিয়মের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। পিআরআই এর নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর জানান, একদিকে অর্থের সংকট আছে তারপরও সেখান থেকে যদি হাজার হাজার কোটি টাকা চলে যায় কারণ এ টাকাটা দেশে থাকবে না, এটা দেশের বাইরে চলে যাবে।
ইসলামী ব্যাংকের ঋণ অনিয়ম: দুদক ও বিএফআইইউ’র তদন্ত চেয়ে আইনজীবীর চিঠি
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পরির্তনের পর থেকেই খারাপ হতে থাকে দেশের শীর্ষে থাকা এই ব্যাংকটির অর্থিক ভিত্তি।
তবে এসব বিষয়ে নিরব কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কথা বলতে রাজি হননি কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুখপাত্র।
২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবজারভার কাজ করছিল ইসলামী ব্যাংকে। মালিকানা পরিবর্তনের পর নতুন কোনো অবজারভার নিয়োগ দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।