ঢাকা৭ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৩০শে জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থ বানিজ্য
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. ইসলাম
  6. এভিয়েশন
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলা
  9. জব মার্কেট
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশবাংলা
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
বিজ্ঞাপন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কারো প্রতি অন্যায় করলে যে বিপদে পড়তে হবে

জনবার্তা প্রতিবেদন
জুলাই ৩, ২০২৪ ৪:৫৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মানুষের প্রতি অন্যায় অবিচার অনেক বড় গুনাহ। এর শাস্তি পরকালে তো রয়েছেই, দুনিয়াতেও কঠিন পরিণাম ভোগ করতে হবে। মুমিনকে কষ্ট দেওয়া নিষেধ ঘোষণা করে রাসুল (স.) বলেন, ‘হে ওই জামাত! যারা মুখে ইসলাম কবুল করেছ, কিন্তু অন্তরে এখনো ঈমান প্রগাঢ় হয়নি। তোমরা মুসলমানদের কষ্ট দেবে না, তাদের লজ্জা দেবে না এবং তাদের গোপন দোষ অনুসন্ধানে প্রবৃত্ত হবে না। কেননা যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন দোষ অনুসন্ধানে নিয়োজিত হবে আল্লাহ তার গোপন দোষ প্রকাশ করে দেবেন। আর যে ব্যক্তির দোষ আল্লাহ প্রকাশ করে দেবেন তাকে অপমান করে ছাড়বেন, সে তার উটের হাওদার ভেতরে অবস্থান করলেও।’ (তিরমিজি: ২০৩২)

মানুষের প্রতি অন্যায় বিভিন্নভাবে করা হয়। কখনো দৈহিকভাবে, কখনো মানসিকভাবে। গালি দিয়ে, অপমান করে, মিথ্যাচার করে, দোষ অন্বেষণ ও অপবাদ আরোপ করে মানুষকে কষ্ট দেওয়া হয়। সর্বাবস্থায় এর প্রতিফল পেতে হয়। অনেকে নবী-রাসুলদের ব্যাপারেও খারাপ মন্তব্য করে থাকে, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে। এটি বড় ধরণের কুফরি। এভাবে নবীজিকে কষ্ট দেওয়া সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা আল্লাহ ও তার রাসুলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশাপ করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন অপমানজনক শাস্তি।’ (সুরা আহজাব: ৫৭)

হাসি-কৌতুক ও ঠাট্টাচ্ছলেও অন্যকে গালি দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে অশোভনীয় ও নিন্দনীয়। আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেকি এবং তার সঙ্গে লড়াই ঝগড়া করা কুফরি।’ (বুখারি: ৬০৪৪)

মানুষকে অন্যায়ভাবে কষ্ট দেওয়ার পরিণতি সম্পর্কে অনেকেই জানে না। দুনিয়াতেই যে তাকে ধরা হবে সেটা সে আগেভাগে টের পায় না। ফলে সে অন্যায় করতেই থাকে। এক পর্যায়ে পালানোরও পথ খুঁজে পায় না। মহানবী (স.) বলেছেন, আল্লাহ জালিমকে অবকাশ দেন। অবশেষে যখন তাকে পাকড়াও করেন, তখন তার পলায়নের অবকাশ থাকে না। (বুখারি: ৪৬৮৬)

রাসুলুল্লাহ (স.) আরও বলেছেন, ‘দুটি পাপের শাস্তি আল্লাহ তাআলা আখেরাতের পাশাপাশি দুনিয়ায়ও দিয়ে থাকেন। তা হলো, জুলুম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শাস্তি।’ (তিরমিজি: ২৫১১)

মূলত নিপীড়িতের অশ্রুফোঁটা ও অন্তরের অভিশাপে অবিচারকারীর অধঃপতন ত্বরান্বিত হয়। রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহর কাছ থেকে ফেরত আসে না। ১. ইফতারের সময় রোজাদারের দোয়া। ২. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া। ৩. মজলুমের দোয়া। আল্লাহ তাআলা তাদের দোয়া মেঘমালার ওপরে তুলে নেন এবং তার জন্য আসমানের দরজাগুলো খুলে দেন। মহান রব বলেন, আমার সম্মানের শপথ, কিছুটা বিলম্ব হলেও আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করব।’ (তিরমিজি: ৩৫৯৮)

রাসুলুল্লাহ (স.) আরো বলেন, ‘তোমরা মজলুমের দোয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকো। কেননা মহান আল্লাহ ও তার দোয়ার মাঝে কোনো পর্দা থাকে না।’ (বুখারি: ১৪৯৬)

আল্লাহ তাআলা অনেক অত্যাচারী জাতিকে ধ্বংস করেছেন। সব ধরনের অত্যাচার-উত্পীড়নে অন্যতম ছিল আদ-সামুদ জাতি। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘আমি আদ ও সামুদকে ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের বাড়িঘরই তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট প্রমাণ। শয়তান তাদের কাজকে তাদের সামনে আকর্ষণীয় করে রেখেছিল। অথচ তারা নিদারুণ বিচক্ষণ ছিল। কারুন, ফেরাউন এবং হামানকেও (ধ্বংস করেছি)।’ (সুরা আনকাবুত: ৩৮-৩৯)

অন্যায়ের শাস্তি দুনিয়াতে হলেও, সবচেয়ে বড় বিচার হবে পরকালে। তাই মানুষকে কষ্ট দেওয়া, অন্যায়-অবিচার করা থেকে সতর্ক হওয়া জরুরি। কাউকে আঘাত দিয়ে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে এবং তাওবা করতে হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমান ভাইয়ের প্রতি মানসম্মান বা অন্যকোনো বিষয়ে অন্যায়-অবিচার করে, তবে সে যেন তার কাছ থেকে সেদিন আসার আগে আজই মাফ করিয়ে নেয়, যেদিন তার কাছে দেরহাম ও দিনার কিছুই থাকবে না। সেদিন তার কাছে যদি কোনো আমল থাকে, তবে তার জুলুম পরিমাণ নেকি নিয়ে নেওয়া হবে। আর তার কাছে নেকিও না থাকলে মজলুম ব্যক্তির গুনাহগুলো তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে।’