আজ রোববার বিকেলে মহানগরীর উত্তরার সোনারগাঁও জনপথ সড়কে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের ব্যানারে আয়োজিত শান্তি সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে হাজারও নেতাকর্মীর সমাগম হয়। বিএনপির চলমান বিভাগীয় গণসমাবেশের পাল্টা কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীন দলের এই শোডাউন ছিল।
‘বিএনপি-জামায়াত, উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সন্ত্রাস ও ভয়াবহ নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে’ এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, রাতের আঁধারে কাঁচপুর সেতুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনী ফলক পুড়িয়ে ফেলেছে, ভেঙে ফেলেছে- এরা কারা? এরা আগুন-সন্ত্রাসী। এই আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে, প্রস্তুত হয়ে যান। রাজনীতিকে রাজনৈতিকভাবে আমরা মোকাবিলা করব। যদি খেলার নিয়ম ভঙ্গ করেন, তাহলে খবর আছে।
তিনি বলেন, খেলা হবে। খেলা হবে ভোট চুরি, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। ভুয়া ভোটার তালিকা প্রণয়নকারীদের বিরুদ্ধে। খেলা হবে বিএনপির বিরুদ্ধে। খেলা হবে নির্বাচনে, খেলা হবে আগামী ডিসেম্বরে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি মিথ্যাচার করে ও ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে চাচ্ছে। কিছু মিডিয়া ও বৃদ্ধিজীবী বিএনপির সমাবেশ দেখে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি বলেন, তারেক রহমান লন্ডনে বসে প্রতিদিন শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা কাজ করে যাচ্ছেন।
এদিকে বিকেল ৩টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুপুরের পর থেকেই উত্তরার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে থানা ও ইউনিট কমিটির নেতাকর্মীরা মিছিল করে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন। নানা রঙের টুপি ও টি-শার্ট পরে এবং বাদ্য-বাজনার তালে হাততালি ও স্লোগান দিয়ে সমাবেশে যোগ দেন তাঁরা। দুপুর আড়াইটার আগেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জসীম উদ্ দীন সড়ক, আজমপুর, রাজলক্ষ্মী ও হাউস বিল্ডিং বাসস্ট্যান্ড এলাকা নেতাকর্মীদের ভিড়ে জনারণ্যে পরিণত হয়।
শান্তি সমাবেশ আয়োজনে উত্তরার ৫ ও ৭ নম্বর সেক্টরের মাঝে থাকা লেকের পাড়ে সড়কের ওপর দুটি ট্রাক পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে মঞ্চ করা হয়েছিল। এই মঞ্চের সামনে-পেছনে দু’পাশেই বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখা গেছে। অন্যদিকে, সমাবেশের কারণে সোনারগাঁও জনপথ সড়কের ১১ ও ১২ নম্বর সেক্টর মোড় থেকে হাউস বিল্ডিং বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া মিছিলের কারণে আজমপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে আবদুল্লাহপুর সড়কেও ছিল তীব্র যানজট। ফলে পথচারী ও অফিস-ফেরত মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
মহানগর উত্তর আওয়ামী সভাপতি বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচির সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা-১৮ আসনের সংসদ সদস্য হাবিব হাসান, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাজিম উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা এবং দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার বাপ্পি।