জলবায়ু পরিবর্তন ও এল নিনোর প্রভাবে বিশ্বজুড়েই চলতি বছর প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে। বৈশ্বিক এই বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়নি ইরানও। দেশটিতে ‘নজিরবিহীন গরমে’ অতিষ্ঠ জনগণ। তাই বাধ্য হয়ে দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে দেশটি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, নজিরবিহীন গরমের কারণে আজ বুধবার এবং আগামী বৃহস্পতিবার দেশের সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি ইরান সরকার দেশটির জনগণকে কোনো প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাইরে বের না হওয়ার অনুরোধ করেছে।
ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের অনেক শহর এরই মধ্যে প্রচণ্ড গরমের কবলে পড়েছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আভাজে চলতি সপ্তাহে তাপমাত্রা ১২৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৫১ সেলসিয়াস) ছাড়িয়ে গেছে।
সরকারের মুখপাত্র আলী বাহাদোরি-জাহরোমি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলেছেন, বুধ ও বৃহস্পতিবার ছুটি থাকবে। একই দিনে পৃথক এক ঘোষণায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাসপাতালগুলোকে উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। আজ বুধবার তেহরানে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘জুলাইয়ের তাপমাত্রা রেকর্ডে প্রমাণিত হয়েছে যে পৃথিবী বৈশ্বিক উষ্ণতার যুগ থেকে বৈশ্বিক ফুটন্ত যুগে প্রবেশ করেছে।’
গুতেরেস বলেন, ‘পুরো গ্রহের জন্য এটি একটি বিপর্যয়। ২০২৩ সালের জুলাইয়ের দাবদাহ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে। জলবায়ু পরিবর্তন এখানে ভয়ংকর। এটি মাত্র শুরু। বৈশ্বিক উষ্ণতার যুগ শেষ হয়েছে; বৈশ্বিক ফুটন্ত যুগ এসেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ানক ফলাফল এখন আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। বিজ্ঞানীদের সতর্কবার্তা সঠিক হয়েছে। একমাত্র ভিন্নতা হলো, এই পরিবর্তন বিজ্ঞানীদের অনুমানের চেয়েও দ্রুতগতিতে হয়েছে।’ এই দুঃখজনক পরিণতিতে তিনি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নিয়ে পুনরায় ভেবে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।
পর্তুগালে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তাপমাত্রার সঙ্গে উষ্ণ বাতাসও অসহনীয়। এখনো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে লাভের আশা করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে নিশ্চুপ থাকা অগ্রহণযোগ্য। নেতাদের অবশ্যই নেতৃত্ব দিতে হবে। আর কোনো দ্বিধা নেই। আর কোনো অজুহাত নেই।’