দিনাজপুরে ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিজয় দিবসের শোভাযাত্রা কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার সকাল আটটার দিকে শহরের কলেজ মোড় চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে ছাত্রশিবিরের দুই কর্মীকে আটক করে।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ জানায়, বিজয় দিবসের শোভাযাত্রার নামে ছাত্রশিবিরের শতাধিক নেতা–কর্মী কলেজ মোড় এলাকার রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করছিল। এ সময় লাঠিসোঁটাসহ দুই শিবিরকর্মীকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আটক দুজন হলেন—দিনাজপুর সরকারি কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান (২৫) ও দিনাজপুর সদর উপজেলার রামডুবি এলাকার ফুলবন ফাজিল মাদ্রাসার দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী হাসান আলী (১৯)। পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় মুশফিকুর ও হাসান দুজনেই নিজেদের শিবিরের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেন। মুশফিকুরের বাড়ি বিরামপুর উপজেলার মুকুন্দপুর গ্রামে ও হাসান সদর উপজেলার উত্তর শিবপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বিরামপুর থেকে আসা একটি বাসে ছাত্রশিবিরের ৫০ থেকে ৬০ জন নেতা–কর্মী শহরের মির্জাপুর বাস টার্মিনালে নামেন। এরপর শহরের কালুরমোড়, মির্জাপুর, এলাকা থেকে বিচ্ছিন্নভাবে ৫-৭ জনের একাধিক দলে টার্মিনাল এলাকায় আসেন। সেখানে ব্যানার-ফেস্টুন হাতে শতাধিক নেতা–কর্মী জড়ো হলে তাঁরা ‘নারায়ে তাকবির’ ধ্বনি তুলে শোভাযাত্র নিয়ে কলেজ মোড়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। ছাত্রশিবিরের ওই শোভাযাত্রার সামনের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘৫২তম মহান বিজয় দিবস সফল হোক’। এই শোভাযাত্রার আয়োজক ছিল দিনাজপুর শহর ছাত্রশিবির।
।
শোভাযাত্রাটি কলেজ মোড় চত্বরে আসার পর মুশফিকুর বক্তব্য দিতে শুরু করলে তাঁরা দিনাজপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের তোপের মুখে পড়েন। এ সময় ছাত্রলীগের সঙ্গে শিবিরের নেতা–কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে ছাত্রশিবিরের নেতা–কর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। এ সময় মুশফিকুর ও হাসানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ছাত্রশিবিরের এক কর্মী বলেন, কয়েক দিন ধরে তাঁরা ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে নিজেরা জড়ো হওয়ার বিষয়ে আলোচনা করছিলেন। দিনাজপুর শহর ছাত্রশিবিরের ব্যানারে শোভাযাত্রা বের হলেও সেখানে যোগ দেওয়া অধিকাংশ নেতা–কর্মীরাই বিরামপুর ও ফুলবাড়ী উপজেলা থেকে এসেছেন।
দিনাজপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমরা সকালে নেতা–কর্মীদের নিয়ে বিজয়ের অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়ার জন্য কলেজ মোড়ে অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ দেখি নারায়ে তাকবির ধ্বনি তুলে ছাত্রশিবিরের মিছিল। তারা (শিবির নেতা–কর্মী) রাস্তার মাঝখানে বসে পড়ে রাস্তা অবরোধ করে এবং হ্যান্ডমাইকে বক্তব্য দিতে শুরু করে। পরে আমরা তাদের রাস্তা ছেড়ে দিতে বললে তারা উল্টো আমাদের ওপর আক্রমণ করার চেষ্টা করে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তাদের (শিবির নেতা-কর্মী) ছত্রভঙ্গ করে দেয়।’