ঢাকা১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৩ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থ বানিজ্য
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. ইসলাম
  6. এভিয়েশন
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলা
  9. জব মার্কেট
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশবাংলা
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
বিজ্ঞাপন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মক্কা বিজয়ের পর যাদের ক্ষমা করেননি নবীজি

জনবার্তা প্রতিবেদন
আগস্ট ১৪, ২০২৪ ২:১৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ইসলামের ইতিহাসে মক্কা বিজয় একটি অসাধারণ ঘটনা। এই বিজয়ের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তাঁর দ্বীন ও রাসুলকে শক্তিশালী করেছেন। কাফের-মুশরিকদের হাত থেকে পবিত্র ঘর ও শহরকে মুক্ত করেছেন। এই বিজয়ের ফলে দলে দলে লোক ইসলামে প্রবেশ করেছিল। সেসময় কাবার ভেতরে ৩৬০টি মূর্তি ছিল। ধনুকের মাধ্যমে এক এক করে নবীজি মূর্তিগুলোকে ভেঙে ফেললেন এবং কোরআনের এই আয়াতটি পাঠ করছিলেন- ‘বলুন, সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল।’ (সুরা বনি ইসরাঈল: ৮)

মক্কা ছিল কাফের-মুশরিকদের ঘাঁটি। যদিও এখানেই নবীজির জন্ম ও বেড়ে ওঠা; এখানেই পবিত্র ঘর কাবা শরিফ। কিন্তু ইসলামকে নিভিয়ের দেওয়ার সকল ষড়যন্ত্র ও নির্মমতা এই মক্কাতেই হতো। সেই মক্কা বিজয়ের পর মক্কার কাফির মুশরিক সবাই ভাবছিল- আজ বুঝি নিস্তার নেই। সেদিন তারা ভয়ে একেবারে মুহ্যমান হয়ে পড়েছিল। যারা অশ্লীল ভাষায় মহানবী (স.)-কে গালাগাল করত, বিষাক্ত বর্শা হাতে তাঁকে হত্যা করতে ওঁত পেতে থাকত, তাঁর দেহ মোবারক থেকে রক্ত ঝরাত, নামাজে নাড়িভুঁড়ি চাপা দিত, মাতৃভূমি ত্যাগ করতে যারা বাধ্য করেছিল, তারা সবাই শিয়ালের মতো লেজ গুটিয়ে চেয়ে আছে মহানবী (স.)-এর ফয়সালার দিকে।

সেদিন নবীজি কুরাইশদের সম্বোধন করে বললেন- ‘আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। যাও তোমরা আজ মুক্ত।’ (কাশশাফ: ৬/৪৫১)

নবীজির (স.) এই অপূর্ব করুণা দেখে ভীতসন্ত্রস্ত মক্কাবাসী অভিভূত হয়ে পড়ে। তারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে নবীজি (স.)-এর চরণতলে নিজেদের সঁপে দেয়। তারা উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করতে থাকে—‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।’

নবীজির এই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার মাধ্যমে সব অপরাধীকে ক্ষমা করা হলেও কিছু জঘন্য অপরাধীকে সেদিনও ক্ষমা করা হয়নি। সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ (স.) মক্কায় সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। তবে চার পুরুষ ও দুই নারী ছাড়া। তিনি বলেন, তাদের যদি কাবার গিলাফ আঁকড়ে ধরা অবস্থায়ও পাও তবু তাদের হত্যা করো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৬৮৩)

সেই ৬ জনের পরিচয় কী? কী অপরাধ ছিল তাদের? আসুন জেনে নিই।
১. আবদুল্লাহ ইবনে খাতাল: সে ছিল ইসলাম গ্রহণকারীদের একজন। রাসুলুল্লাহ (স.) তাকে সদকা আদায়ের জন্য পাঠালে সহকর্মীকে হত্যা করে সে মক্কায় পালিয়ে যায় এবং ইসলাম ত্যাগ করে। সাঈদ ইবনে হুরাইস মাখজুমি এবং আবু জাররাহ আসলামি (রা.) তাকে হত্যা করেন।

২. হুরাইস ইবনে নুকাইস: তার অপরাধ ছিল সে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর দুই মেয়েকে শারীরিকভাবে আঘাত করেছিল। আলী (রা.) তাকে হত্যা করেন।

৩. হুবাবা ইবনে মুকিস: সে একজন আনসারি সাহাবিকে হত্যা করে এবং ইসলাম ত্যাগ করে মক্কায় পালিয়ে যায়। নামিলা বিন আবদুল্লাহ (রা.) তাকে হত্যা করেন।

৪. সাদ ইবনে আবদুল্লাহ: প্রথমে ইসলাম গ্রহণ করেছিল, কিন্তু পরবর্তী সময়ে মুরতাদ হয়ে মক্কার কাফেরদের সঙ্গে যোগ দেয়। সে উসমান ইবনে আফফান (রা.)-এর কাছে আশ্রয় চাইলে তাঁর সুপারিশে রাসুল (সা.) তাকে ক্ষমা করেন। ক্ষমাপ্রাপ্ত হওয়ার পর সে পুনরায় ইসলাম গ্রহণ করে।

৫-৬. আবদুল্লাহ ইবনে খাতালের দুই বাঁদি: তারা তাদের মনিবের সঙ্গে কবিতা ও গানে গানে রাসুলুল্লাহ (স.)-এর বিরুদ্ধে কুৎসা রচনা করত। তাদের একজনকে হত্যা করা হয় এবং অপরজন পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে নিরাপত্তা লাভ করে এবং ইসলাম গ্রহণ করে। (ড. উসমান কাদির, কিরায়াতু ফি ফাতহি মক্কা, পৃষ্ঠা: ২৪-২৫)

অষ্টম হিজরির রমজান মাসে ঐতিহাসিক মক্কা বিজয় সংঘটিত হয়। রাসুলুল্লাহ (স.) সংঘাত ও রক্তপাত এড়ানোর সাধারণ নির্দেশনা জারি করেন। তবু বিক্ষিপ্ত ঘটনায় ১২-১৪ জন মানুষ নিহত হয়। (ড. উসমান কাদির, কিরায়াতু ফি ফাতহি মক্কা, পৃষ্ঠা-২৪)