ঢাকা২৫শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ১৮ই জিলহজ, ১৪৪৫ হিজরি ১১ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থ বানিজ্য
  2. আইন আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. ইসলাম
  6. এভিয়েশন
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলা
  9. জব মার্কেট
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. দেশবাংলা
  13. বিনোদন
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
বিজ্ঞাপন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হিজবুল্লাহর ফাঁদে ইসরাইল, বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কা

জনবার্তা প্রতিবেদন
জুন ১৬, ২০২৪ ২:৩১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ইসরাইল ও লেবাননের ইরান-সমর্থিত ইসলামিক গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ সীমান্তে ক্রমবর্ধমান আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে সংঘাতের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে চলেছে। এই সংঘাতের কারণে ইসরাইলি সেনাবাহিনী বড় আকারের অভিযানের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। আট মাস ধরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চললেও সম্প্রতি এটি তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর সঙ্গে হামাসের সঙ্গে নিয়মিত সংঘাত চলেছে। ফলে দুই পক্ষকে সামাল দিতে হচ্ছে ইসরাইলি বাহিনীকে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরাইল এখন তার উত্তর ফ্রন্টকে উপেক্ষা করতে পারছে না এবং সেখানে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছে।

লেবানন ও ইসরাইল কয়েক দশক ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। ১৯৮২ সালে ইসরাইল লেবাননে আক্রমণ চালিয়ে রাজধানী বৈরুত পর্যন্ত ট্যাংক পাঠিয়েছিল। লেবাননে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের আক্রমণের পর এটি করেছিল ইসরায়েল। পরে ২২ বছর ধরে দক্ষিণ লেবানন ইসরাইল দখল করে রাখে। সেখানে হিজবুল্লাহ ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং ইসরাইলকে ওই অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করে।

হিজবুল্লাহ ইরান-সমর্থিত একটি লেবানিজ আন্দোলন। গোষ্ঠীটির মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম শক্তিশালী আধাসামরিক বাহিনী রয়েছে। তারা ইসরাইলকে প্রতিহত করার দায়িত্বে নিয়োজিত এবং বৈরুত ইসরাইলকে শত্রু রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করে। পশ্চিমা বিশ্বে হিজবুল্লাহকে প্রায়ই সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে গণ্য করা হয়।

ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর সাম্প্রতিক শত্রুতা শুরু হয় যখন গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে অপহরণ করে। এরপর ইসরাইল গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহ বলেছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে তারা ইসরাইলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাত ক্রমাগত বাড়ছে। সংঘর্ষের সংখ্যা এবং আকার বৃদ্ধি পাওয়ায় যুদ্ধের আশঙ্কা বেড়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইরাক, সিরিয়া ও লেবানন প্রকল্পের পরিচালক হেইকো উইমেন বলেছেন, এটি একটি ধীরগতির উত্তেজনা যা ক্রমাগত বাড়ছে। সীমান্তে দুপক্ষের হতাহতের সংখ্যা এবং হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত অস্ত্রের ধরণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই সংঘাতের মধ্যে নতুন ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে। ৮ জুন হিজবুল্লাহ প্রথমবারের মতো ইরানি তৈরি ফালাক ৩ রকেট ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে নিক্ষেপ করে। ফালাক ২ পূর্ববর্তী ফালাক ১-এর উন্নত সংস্করণ। এটির পাল্লা বেশি এবং বড় ওয়ারহেড রয়েছে।

ইসরাইলের উত্তর সীমান্তে ইসরায়েলি সেনা একটি প্রাচীন অস্ত্র ‘ক্যাটাপল্ট’ ব্যবহার করেছে। যা ১৬তম শতাব্দী থেকে সামরিক বাহিনী দ্বারা খুব কমই ব্যবহৃত হয়েছে। এতে আগুনের গোলা নিক্ষেপ করে লেবাননের ভূখণ্ডে ম্যানগ্রোভ বন পোড়ানো হয়েছে। ইসরাইলি সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কান জানিয়েছে, এটি একটি স্থানীয় উদ্যোগ ছিল এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়নি।

দুপক্ষই কঠোর বক্তব্য দিয়ে আসছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, যদি কেউ মনে করে তারা আমাদের ক্ষতি করতে পারে এবং আমরা নীরব থাকব, তারা ভুল করছে। যেভাবেই হোক আমরা উত্তরে নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনব।

হিজবুল্লাহর দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা নাইম কাসেম আলজাজিরাকে বলেছেন, আমরা সর্বাত্মক যুদ্ধ চাইছি না। কিন্তু যদি তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়, আমরা প্রস্তুত এবং পিছিয়ে যাব না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই পক্ষই হয়তো সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করতে চায় না। তবে তাদের উত্তেজক কর্মকাণ্ড যেকোনো সময় একটি সংঘাতকে উসকে দিতে পারে।

ইসরাইলের গ্যালিলি অঞ্চলে রকেট হামলার কারণে বহু ঘরবাড়ি খালি করা হয়েছে। ইসরাইলি ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইটামার বেন গাভির বলেছেন, হিজবুল্লাহর সব শক্তিশালী ঘাঁটিকে পুড়িয়ে ধ্বংস করতে হবে। যুদ্ধ! যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা বৃদ্ধির বিষয়ে সতর্ক করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকির বিষয়ে উদ্বিগ্ন। উপসাগরীয় অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, আরো সংঘাত অনিবার্য বলে মনে হচ্ছে।

অধিকৃত ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ।

হিজবুল্লাহ যুদ্ধের মিডিয়া একটি আক্রমণকারী ড্রোন দিয়ে ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চলে ইহুদিবাদী শাসকদের ঘাঁটি লক্ষ্যবস্তু করার দৃশ্য প্রকাশ করেছে।

ভিডিওতে দেখানো হয়েছে কিভাবে হিজবুল্লাহ ড্রোন দিয়ে লেবাননের সীমান্তের কাছে ইহুদিবাদী শাসক বাহিনীর অন্তর্গত বায়াদ ব্লিদা সদর দফতরকে লক্ষ্য করে।

আল জাজিরার প্রতিবেদক জানিয়েছিলেন যে ফিলিস্তিনের অধিকৃত উত্তরের আপার গ্যালিলে সাইরেন বাজছে।

লেবাননের হিজবুল্লাহ গাজা উপত্যকায় শাসকের গণহত্যামূলক যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া হিসাবে উত্তর দখলকৃত অঞ্চলে ইসরায়েলি সরকারের সামরিক অবস্থানগুলিকে বারবার লক্ষ্যবস্তু করেছে।

সূত্র: সিএনএন।